একটি শিক্ষিত ও দক্ষ জনগোষ্ঠীই একটি জাতির সবচেয়ে বড় সম্পদ। জনাব হামিদুর রহমান হামিদের রাজনৈতিক দর্শনে শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়। তিনি বিশ্বাস করেন, মানসম্মত শিক্ষা কোনো বিশেষ গোষ্ঠীর জন্য সুবিধা নয়, বরং এটি প্রত্যেক নাগরিকের একটি মৌলিক অধিকার, যা আর্থ-সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে সকলের কাছে পৌঁছানো উচিত। এই প্রবন্ধে আমরা সার্বজনীন মানসম্মত শিক্ষার গুরুত্ব এবং ব্যক্তি ও সমাজের ওপর এর যুগান্তকারী প্রভাব নিয়ে আলোচনা করব।
একটি উন্নত সমাজের ভিত্তি
মানসম্মত শিক্ষা একটি উন্নত সমাজের মূল ভিত্তি স্থাপন করে। এর কাজ শুধু পুঁথিগত জ্ঞান দেওয়া নয়, বরং শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা এবং সৃজনশীলতা তৈরি করা। একটি সুশিক্ষিত জাতি আধুনিক বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে এবং উদ্ভাবন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক অগ্রগতিতে অবদান রাখতে অধিক সক্ষম হয়।
সবার জন্য সমান সুযোগ
মানসম্মত শিক্ষা সকলের জন্য সমান সুযোগের দ্বার উন্মুক্ত করে এবং সমাজে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করে। জনাব হামিদের স্বপ্ন এমন একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে কোনো শিশুর ভবিষ্যৎ তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা বা সামাজিক পরিচয়ের ওপর নির্ভর করবে না, বরং তার মেধা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে। শিক্ষা প্রতিটি ব্যক্তিকে তার সম্পূর্ণศัก্যল বিকাশে সহায়তা করে একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখে।
দারিদ্র্য বিমোচনের হাতিয়ার
শিক্ষা দারিদ্র্যের চক্র ভাঙার সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার। এটি মানুষকে 안정மான কর্মসংস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও জ্ঞান সরবরাহ করে, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে দারিদ্র্য দূর করতে সাহায্য করে।
নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন
মানসম্মত শিক্ষা নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ক্ষমতায়নের একটি প্রধান উপায়। এটি লিঙ্গ সমতা অর্জনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে এবং নারীদের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক জীবনে পুরোপুরি অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়। জনাব হামিদ বিশ্বাস করেন, একজন শিক্ষিত মা একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দিতে পারেন, তাই নারীশিক্ষার প্রসার অপরিহার্য।
চ্যালেঞ্জ ও সমাধান
সবার জন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার পথে অপর্যাপ্ত বাজেট, অবকাঠামোগত দুর্বলতা এবং সামাজিক বাধা সহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় জনাব হামিদুর রহমান হামিদের রয়েছে বাস্তব অভিজ্ঞতা ও গৌরবময় ইতিহাস।
তিনি ছাত্রজীবন থেকেই শিক্ষার অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। জগন্নাথ কলেজকে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের আন্দোলনে তাঁর অসামান্য ভূমিকা এর এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি শুধু নীতিগতভাবেই শিক্ষার গুরুত্ব দেন না, বরং ব্যক্তিগতভাবেও এর প্রসারে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর ব্যক্তিগত অর্থায়নে বহু স্কুল ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
উপসংহার
সবার জন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা কেবল একটি লক্ষ্য নয়, এটি একটি টেকসই ও সমতাভিত্তিক ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের পূর্বশর্ত। শিক্ষায় বিনিয়োগের মাধ্যমে আমরা প্রকৃতপক্ষে আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সম্ভাবনার ওপর বিনিয়োগ করি। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শিক্ষানীতি দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে, জনাব হামিদুর রহমান হামিদ এমন একটি শিক্ষিত ও উন্নত বাংলাদেশ গড়তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যেখানে অগ্রগতির যাত্রায় কেউ পিছিয়ে থাকবে না।